Blog 55: এই গরমে কিভাবে কমাবেন অ্যাকনে এবং পিম্পল
যারা সারা বছরই কম বেশি অ্যাকনে বা পিম্পলের সমস্যায় সাফার করেন তাদের কাছে গ্রীষ্ম মানেই আরো বেশি স্কিনের সমস্যা। গ্রীষ্মকালে উচ্চতাপমাত্রা আর হিউমিডিটির প্রভাবে ঘাম যেমন বেড়ে যায় সেইরকমই ত্বকের তৈলগ্রন্থি থেকে তেল নিঃসরণও হয় অনেক বেশি। এর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অ্যাকনে এবং পিম্পলের সমস্যা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। তবে এই গরমেও ত্বককে অ্যাকনে এবং পিম্পল মুক্ত রাখা এমন কিছু কঠিন নয়। রোজকার ত্বক পরিচর্যার রুটিনে কয়েকটি দরকারি জিনিস যোগ করে ফেললেই হবে অ্যাকনে আর পিম্পলের সমস্যার সমাধান।
তবে প্রথমে জেনে নেওয়া যাক গরমে অ্যাকনে আর পিম্পল বেড়ে যাওয়ার কারণগুলো,
১) তৈলগ্রন্থি থেকে বেশি তেল নিঃসরণ
বেশি তাপমাত্রা এবং হিউমিডিটির প্রভাবে ত্বকের তৈলগ্রন্থি থেকে অনেক বেশি তেল নিঃসরণ হয় গ্রীষ্মকালে। ত্বকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি তেল স্বাভাবিক ভাবেই অ্যাকনে এবং পিম্পলের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। বার বার সাবান জাতীয় ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধোওয়ার ফলেও ত্বক আরো ড্রাই হয়ে যায় এবং সেই ড্রাইনেস কমানোর জন্য তৈলগ্রন্থি আরো বেশি তেল নিঃসরণ শুরু করে। ফলস্বরূপ, ত্বকে বাড়তি তেলের প্রবলেম কমার বদলে আরো বেড়ে যায়।
২) বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কিন পোরস
অত্যধিক তেল আর ঘাম মিলে ত্বককে করে তোলে চটচটে, যার ফলে মৃত ত্বক কোষ এবং ধুলো, পলিউশন খুব সহজেই ত্বকে আটকে গিয়ে স্কিন পোরস বন্ধ করে দেয়। এই বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কিন পোরসে ব্যাক্টিরিয়ার সংক্রমণ থেকেই পিম্পল হয়।
৩) সানস্ক্রিন ও মেকআপ
ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি এবং তাপ থেকে বাঁচাতে সানস্ক্রিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অয়েল বেসড সানস্ক্রিন চটচটে হওয়ায় পিম্পল এবং অ্যাকনের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। মেকআপ থেকেও স্কিন পোরস বন্ধ হয়ে গিয়ে পিম্পল হতে পারে।
৪) সঠিক হাইজিন মেনে না চলা
অপরিষ্কার রুমাল ব্যাবহার বা অপরিষ্কার হাত দিয়ে মুখের ঘাম মোছার থেকে পিম্পল এবং অ্যাকনের সমস্যা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
এবারে জানা যাক কিভাবে সহজেই পাওয়া যাবে পিম্পল এবং অ্যাকনের সমস্যা থেকে মুক্তি, এই গ্রীষ্মেও,
১) ত্বকের ডিপ ক্লিনজিং খুবই জরুরি
গ্রীষ্মকালেও ত্বককে পিম্পল এবং অ্যাকনে মুক্ত রাখতে প্রতিদিন সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার করা ভীষন গুরুত্বপূর্ণ। তবে বার বার মুখ ধোওয়া মোটেও ঠিক নয়, এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। দিনে দুবার, সকালে এবং রাত্রে মুখ ধোওয়ার জন্য ব্যাবহার করুন একটি ১০০% সোপ ফ্রি ফেস ওয়াশ যা আপনার ত্বকের উপযোগী । এক্ষেত্রে ড্রাই স্কিনের জন্য ফ্রেশ লুক নিম ফেশ ওয়াশ এবং অয়েলি ত্বকের জন্য ফ্রেশলুক ব্ল্যাকবেরি ও ট্রি ট্রি ফেশ ওয়াশ ব্যাবহারে উপকার পাওয়া যাবে।
২) ত্বক নিয়মিত টোন এবং হাইড্রেট করুন
একটি সঠিক টোনারের নিয়মিত ব্যাবহার গরমকালে পিম্পলের সমস্যা কমাতে যথেষ্ট কার্যকরী। স্কিন টোনার, উন্মুক্ত স্কিন পোরস বন্ধ করে দেয় এবং ত্বকে আদ্রতার যোগান দেয়। নিম ওয়াটার টোনারের নিয়মিত ব্যাবহার সবচেয়ে উপকারি অ্যাকনে এবং পিম্পল কমাতে।
৩) অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব নিয়ন্ত্রন করুন
গরমকালে অ্যাকনে এবং পিম্পলের সমস্যা বাড়ার একটা মুখ্য কারণ হল ত্বকের তৈলগ্রন্থি থেকে অত্যধিক তেল নিঃসরণ। ক্লিয়ার এন্ড ক্লিন অ্যাকোয়া সলিউশান ত্বকের pH ব্যালান্সকে স্বাভাবিক করে এবং তৈলগ্রন্থির অত্যধিক কার্যকারীতা কমায়। এটি ঘাম নিঃসরণও কমায়, ফলে যেমন নতুন ব্রেকআউটের সম্ভাবনা কমে, পুরনো অ্যাকনেও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। একটি কটন বলে ক্লিয়ার এন্ড ক্লিন সলিউশান নিয়ে পিম্পল বা অ্যাকনে আক্রান্ত স্থানে সরাসরি লাগান এবং রেখে দিন অন্তত এক ঘন্টা| প্রতিদিন দু বার করে পরিষ্কার ত্বকে ক্লিয়ার এন্ড ক্লিন লাগালেই উপকার পাওয়া যাবে।
৪) আতিরিক্ত অ্যাকনের ক্ষেত্রে একটি অ্যান্টি অ্যাকনে প্যাক ব্যাবহার করুন
অ্যাডভান্স স্টেজের অ্যাকনে কমানোর জন্য একটি প্রফেশনাল স্ট্রেন্থের অ্যান্টি অ্যাকনে প্যাক, যেমন, ক্লিয়ার অফ প্যাক ব্যাবহার করা দরকার। ফল পেতে প্যাকটি সপ্তাহে অন্তত তিনদিন ব্যাবহার করুন।
৫) ত্বকের রেগুলার নারিশমেন্টের কথা কিন্তু ভুলবেন না
গরমকালে অতিরিক্ত অ্যাকনে এবং পিম্পলের সমস্যা হলে, আপনার রোজকার ময়শ্চারাইজারের পরিবর্তে ব্যাবহার করুন নিম জেল। এটি ত্বকের অ্যাকনে, পিম্পল, অ্যালার্জি কমায় এবং ত্বককে দেয় প্রয়োজনীয় নারিশমেন্ট।
নোটঃ মাথায় ড্যানড্রফ থাকলে তার থেকে অ্যাকনে এবং পিম্পলের সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওপরের অ্যান্টি অ্যাকনে রেজিমের সাথেই সাইন এন্ড সিল্ক ড্যানড্রফ রিমুভাল শ্যাম্পু এবং রুট এক্টিভ অ্যান্টি- ড্যানড্রফ সলিউশন ব্যাবহার করুন।